অস্ট্রেলিয়ার এক প্রাচীন ভাষা, যার লিখিত কোনো রূপ নেই

 


ODD বাংলা ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে ২৫০টিরও বেশি কথ্য আদিবাসী ভাষা এবং ৮০০টি উপভাষা রয়েছে। কিন্তু একটি ভাষা ছিল, যা কখনো মুখে বলা হয়নি, বরং সেটি কাঠে খোদাই করা হয়েছিল। খবর বিবিসির। 


'মেসেজ স্টিক' হিসেবে পরিচিত চ্যাপ্টা, গোলাকার বা আয়তাকার কাঠের টুকরোগুলোর দুই পাশে অলংকরণের মাধ্যমে মেসেজ বা বার্তা খোদাই করা হতো। বার্তাগুলোতে ফুটে উঠেছিল মহাদেশটির আদিম অধিবাসীদের আখ্যান; এই অ্যাবরিজিনালদের গণ্য করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম জনগোষ্ঠী হিসেবে।


ধারণা করা হয়, মেসেজ স্টিকের ব্যবহার ছিলো হাজারও বছর আগে। জাতির মৌখিক ইতিহাসকে ধারণ করতে এবং দূরে অবস্থানকারী বিভিন্ন অ্যাবরিজিনাল নেশন বা ভাষা গোষ্ঠীর মধ্যে সংবাদ সরবরাহের জন্য বার্তাবাহকেরা মেসেজ স্টিক বহন করতো।


মেসেজ স্টিকে অঙ্কিত মোটিফগুলো যুদ্ধ, মৃত্যু, শান্তি, বিয়ে এবং আরও অনেক কিছুর সংবাদ নির্দেশ করতে পারে। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার ওয়াংকুমারা এবং মুরুওয়ারি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সদস্য এবং ইতিহাসবিদ ড. লরিনা বার্কারের উল্লেখ করা যায়। মেসেজ স্টিকের বার্তাগুলো তার শেকড়ের সাথে একটি অর্থপূর্ণ সংযোগ বহন করে।


টিকে যাওয়া মেসেজ স্টিকগুলোর কিছু এখন সিডনির অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়ামে কাঁচের ডিসপ্লেতে সংরক্ষিত আছে; তবে এসবে খোদাই করা বেশিরভাগ তথ্যেরই মর্মোদ্ধার করা যায়নি। ভাষাতত্ত্ব নিয়ে কাজ করা নৃতাত্ত্বিক পিয়ার্স কেলির মতে, বিংশ শতকে মেসেজ স্টিকের ওপর সামান্য তথ্যই প্রকাশ পেয়েছে।


এসব শিলালিপির ভাষাকে বোধগম্য (ডিকোড) করে তুলতে বয়োজ্যেষ্ঠ আদিবাসীদের তালিকাভুক্ত করা প্রয়োজন, যারা নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠী, অবস্থান বা আইডিয়ার রূপায়ন বুঝে উঠতে পারবেন।


এই প্রবীণদের সাহায্য ব্যতীত ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদের শেকড়ের এই মূল্যবান অংশ ধরে রাখতে পারবে না। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.