অ্যাপার্টমেন্টে কুকুর পালার আগে যা জানা জরুরি



 ODD বাংলা ডেস্ক: শহরে অনেকেই কুকুর পালার শখ করেন। তবে ফ্ল্যাটবাড়িতে কুকুর পালাটা একটু কঠিন। কিন্তু বাড়ির ছোটদের আবদার যদি হয় যে সে পালবেই তাহলে বিপদ। আবার আপনারও হয়তো কিছুটা সায় আছে। এখন অবশ্য ফ্ল্যাটে কুকুর পালার চল শুরু হয়ে গেছে। সমস্যা হলো, কোনো পোষ্য নেওয়ার সময় প্রস্তুতি সম্পর্কে অনেকেরই জানা থাকে না। 


পশ্চিমা বিশ্ব বলুন কিংবা এশিয়ার অনেক দেশ বলুন, পোষ্য নেওয়ার চল আছে। এমনকি এশিয়ার দেশ জাপানেও পোষ্য নিতে হলে আগে কিছু বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হয়। বাড়ির ছোটদের আবদার হলেও তাকে কথা দিতে হয় যে সে কিছু দায়িত্ব ঠিকই পালন করবে।


আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট একটু আলাদা। তবে কুকুর পোষ্য নিলে কিছু বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। নাহলে আপনি কুকুর আনলেন ও পরে রাখতে না পেরে অন্য কোথাও দিলেন বা রাস্তায় ছেড়ে দিলেন তাহলে তা অমানবিক হবে। এ বিষয়ে তাই কিছু পরামর্শ রইলো:


নতুন কুকুর বাসায় আনার আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। টিকা, খাবার সবকিছু ডাক্তারের কাছ থেকে বুঝে নেওয়াই ভালো। আপনার বাড়ির কারো অ্যালার্জি আছে কি-না কুকুরে তাও বুঝে নিতে হবে।

কুকুরের ভ্যাকসিন দেওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

দিনে একবার এদের দাঁত মাজতে হবে ও মাসে একবার নখ কেটে দিতে হবে। যতটা জলদি সম্ভব কুকুরের ‘নিউটার’ বা বন্ধ্যা করানোর ব্যবস্থাও নিতে হবে। বিড়ালের মতো অন্তত কুকুরের ক্ষেত্রে নিউটার না করানোর ঝুঁকি নেওয়া যায় না।

আগে থেকেই ওর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রাখুন। কুকুর আসার আগেই বয়স অনুযায়ী খাবার, খাবারের পাত্র, খেলনা, বিছানা ইত্যাদি প্রস্তুত করে রাখুন। তাহলে কুকুর মানিয়ে নিতে পারবে দ্রুত।

কুকুরের সামনে যা পায় তাতেই মুখ দেওয়া বা চাবানোর অভ্যাস আছে। তাই আশপাশে এমন জিনিস রাখা যাবে না, যা সহজেই ভেঙে যায়। কারেন্টের তার বা বিষাক্ত পদার্থ যাতে আশপাশে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষত

চকলেট কুকুরের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। আপনার জন্য অনেক ভালো হলেও কুকুরের জন্য এটি বিষ। সেটাও ওদের থেকে দূরে রাখুন।

একটি কুকুর ছানাকে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হয়। এর মধ্যে আছে নির্দিষ্ট জায়গায় বাথরুম করা, দরকারি জিনিস চিবিয়ে নষ্ট না করা, কাউকে কামড় না দেওয়া ইত্যাদি। প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগে কীভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হয়, সেটা শিখে নেওয়া জরুরি। এ জন্য কুকুরটির পেছনে বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করতে হবে। এসব ব্যাপারে ধৈর্য আছে কি না, সেই বিষয়ও খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন বা ইউটিউব দেখুন। শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে অনেকে ট্রেনিং দিতে যান বা ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেন। এমনটি করা যাবে না।

কুকুর

নিজের খাবার কুকুরকে দেওয়া যাবে না। এতে ওর অভ্যাস নষ্ট হয়ে যাবে। শুধু ডগ ফুড খেতে দিন। কুকুর বা পোষ্যর সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব রাখতেই হবে।

পোষা কুকুরকে দিনের কিছুটা সময় বাইরে খেলাধুলা করাতে ও হাঁটাতে নিয়ে যেতে হয়। আকার অনুযায়ী আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় দিতে হয়। এই সময়ও দিতে পারবেন কি না তা বুঝে নিতে হবে। আর সময়টাও নিয়মিত করে নিলে কুকুর কিছু অভ্যাস গড়ে নিতে পারে।

কুকুরের জন্য মোটামুটি বড় জায়গা দরকার। আপনার বাসায় সে রকম জায়গা আছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বড় আকারের কুকুরের জন্য প্রচুর জায়গা প্রয়োজন। তাই অ্যাপার্টমেন্টে পালার জন্য ছোট আকারের কুকুর বেছে নেওয়া ভালো। এসব বিষয় মাথায় রাখুন। নাহলের কুকুরের ত অসুবিধা হবেই আপনারও হবে। অনেকেই গ্যারেজে কুকুর রাখেন। এটি ভালো পন্থা নয়। আপনার পোষ্য ঘরে পালাই ভালো।

বিশেষ প্রয়োজনে যদি দূরে যেতে হয়, তাহলে আপনার কুকুর কোথায় থাকবে, সেই ব্যবস্থাও আগে করে নিতে হবে। কারণ কুকুরটিকে তো আর একা ঘরে রেখে যাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে কুকুরের যত্ন নিতে পারবে এমন কারো কাছেই রেখে যাবেন। শুধু পরিচিত আত্নীয়ের কাছে রেখে গেলেই হবে না। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.