বায়ুদূষণের ফলে ৫ বছর পর্যন্ত কমে যেতে পারে ভারতীয়দের আয়ু, আশঙ্কা চিকিৎসকদের



 ODD বাংলা ডেস্ক: ভারতের সবচেয়ে দূষিত শহর নিঃসন্দেহে রাজধানী নয়াদিল্লি। শুধু ভারতেরই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরও বলা যায় নয়াদিল্লিকে। শুধু দীপাবলির সময় আতসবাজি পোড়ানো বা পাঞ্জাব, হরিয়ানায় ফসল পোড়ানোর জন্যই নয়, সারা বছরই নয়াদিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে বায়ুদূষণের মাত্রা সহনশীলতা ছাড়িয়ে যায়। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বায়ুদূষণের ফলে ভারতীয়দের আয়ু ৫ বছর ৩ মাস পর্যন্ত কমে যেতে পারে। দিল্লিবাসীদের আয়ু কমে যেতে পারে ১১ বছর ৯ মাস পর্যন্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহনশীলতার যে মাত্রার কথা বলেছে, দিল্লির বায়ুদূষণ তার চেয়ে অনেক বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতি কিউবিক মিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স সহনশীল বলে ধরা হয়। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে বায়ুদূষণের নতুন মাত্রার কথা জানানো হয়েছে।


চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পার্টিকুলেট ম্যাটার, নাইট্রোজেন ডিঅক্সাইড ও সালফার ডিঅক্সাইডের ফলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এমনকী, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমার মতো রোগও হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে যদি কেউ দূষিত শহরে বাস করেন, তাহলে ফুসফুসের অবস্থারও অবনতি হতে পারে। বায়ুদূষণের ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। হৃদযন্ত্রের প্রকোষ্ঠগুলি সরু ও কঠিন হয়ে যায়। সব বয়সের মানুষেরই ফুসফুসের অবস্থার অবনতি হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের মধ্যে বসবাস করলে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিরও শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। সেই কারণেই চিকিৎসকরা বায়ুদূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন।


চিকিৎসকদের মতে, বর্তমান সময়ে ভারতীয়দের মৃত্যুর অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। এই দূষণের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। এছাড়া হৃদযন্ত্র, কিডনি, মস্তিষ্ক এবং পর্যায়ক্রমে শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিকিৎসক অর্জুন খান্না জানিয়েছেন, 'আমরা বছরের পর বছর ধরে মানুষের শরীরের উপর বায়ুদূষণের প্রভাব খতিয়ে দেখে বুঝতে পেরেছি, বায়ুদূষণের ফলে জীবনের অনেকগুলি বছর নষ্ট হয়ে যায়।' অপর এক চিকিৎসক কুলদীপ কুমার গ্রোভার জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে যদি কারও শরীরে বায়ুদূষণের প্রভাব পড়ে, তাহলে আয়ু কমে যেতে বাধ্য। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের উপর বেশি প্রভাব পড়ে। এছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিরা যদি বায়ুদূষণের প্রভাবমুক্ত না থাকতে পারেন, তাহলে তাঁদেরও স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে। যদি নাগরিকদের আয়ু বৃদ্ধি করতে হয় এবং জনস্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব আনতে হয়, তাহলে বায়ুদূষণের মাত্রা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।’

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.