'সুচিত্রা না থাকলে উত্তম হত না', জন্মদিনে অজানা মহানায়ক
উত্তম-সুচিত্রা জুটির প্রথম হিট ছবি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পাওয়া হাসির এই ছবিটিতে উত্তম কুমার অথবা সুচিত্রা সেন কেউই প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেননি। এমনকি এই ছবিটি যখন রিলিজ হয়, তখন পোস্টারে উত্তম-সুচিত্রার কোনও ছবিও ছিল না। ছবির প্রযোজক ও ডিস্ট্রিবিউটাররা সেই সময়ের বিখ্যাত চরিত্রাভিনেতা তুলসী চক্রবর্ত্তীকে পোস্টারের প্রধান মুখ বানিয়েছিলেন। কিন্তু ছবিটিতে উত্তম-সুচিত্রার রোমান্টিক অভিনয় বাংলা সিনেমায় প্রথম নজরে পড়ে দর্শকদের।
এরপর পরিচালক-প্রযোজকরাও এগিয়ে এলেন এই জুটির ওপর ভরসা করেই। এর পর 'পথে হলো দেরী', 'মরণের পর', 'শাপমোচন', 'শিল্পী', 'সাগরিকা', 'হারানো সুর', 'সবার উপরে', 'সূর্যতোরণ', 'চাওয়া-পাওয়া', 'সপ্তপদী', 'জীবনতৃষ্ণা', 'রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত', 'ইন্দ্রাণী', 'চন্দ্রনাথ', 'আলো আমার আলো'র মতো ' ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে গিয়েছেন এই জুটি। উত্তম-সুচিত্রা জুটি দশকের পর দশক ধরে হয়ে ওঠেন বাঙালির চিরকালীন এক আইকন।
উত্তম কুমার একবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘সুচিত্রা পাশে না থাকলে আমি কখনওই উত্তম কুমার হতে পারতাম না। এ আমার বিশ্বাস। আজ আমি উত্তম কুমার হয়েছি, কেবল ওর জন্য।’ সারাজীবন সুচিত্রাকে রমা বলে ডাকতেন উত্তম। গোড়ার দিকের প্রকাশিত ছবিতে বরাবর সুচিত্রার নাম উত্তমের আগে রাখা হত। উত্তম কুমার মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করতেন, সুচিত্রা সেন তাঁর থেকে বড় স্টার।
বাংলা ছবির ইতিহাস বলে, সুচিত্রা-উত্তম জুটি ভাঙার পর বাংলা ছবির প্রযোজক-পরিচালকদের মাথায় হাত। সেইসময়েও উত্তম কুমার অন্যান্য নায়িকাদের নিয়ে একের পর এক হিট ছবি দিয়ে গেছেন। অন্যদিকে সুচিত্রা সেন বরং অন্য নায়কদের সঙ্গে ছবি করতে গিয়ে সেই মানের হিট দিতে পারেন নি। অনেক ভালো ছবি তৈরি হয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়িক মানে মোটের উপর জুটি চলেনি।উত্তম-সুুচিত্রা আসলে পরস্পরের পরিপূরক, বাঙালির জীবনেএ এক অবিচ্ছেদ্য জুটি।
Post a Comment