মাম্পসের লক্ষণ, নিয়ন্ত্রণে করণীয়

 


ODD বাংলা ডেস্ক: মাম্পস সাধারণত শিশু-কিশোর বয়সে বেশি দেখা যায়। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পেলে সেটি শিশুদের চেয়ে মারাত্মক হয়। মাম্পস হলো ভাইরাসজনিত প্যারোটিড নামের লালাগ্রন্থির প্রদাহ। এটি অত্যন্ত সংক্রামক (ছোঁয়াচে)।


হাঁচি-কাশির (ড্রপলেট) মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। এর ফলে জ্বর, মাথা ব্যথার সঙ্গে কানের সামনে ও নিচে বা চোয়ালের ওপরে দুই পাশে লালাগ্রন্থি ফুলে যায়, খাবার গিলতে বা চিবাতে ব্যথা হতে পারে।

 

প্রধান লক্ষণ

* ভাইরাস শরীরে ঢোকার ১২ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে রোগ প্রকাশ পায়।


* প্রথমে জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, অবসাদ ও ক্ষুধামন্দা দেখা যায়।


মুখ শুকিয়ে যায়। প্রচণ্ড দুর্বল লাগে।

* এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কানের সামনের ও নিচের অংশে অবস্থিত লালাগ্রন্থিতে ব্যথা ও ফোলা শুরু হয়।


* ফোলা প্রথমে এক পাশে শুরু হয়।


৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে অপর পাশে ফুলতে দেখা যায়। এই ফোলা ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

* কানে ও গলায় ব্যথা হতে পারে।


* ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে তেমন লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পায় না।


কারণ


প্যারামিক্সো ভাইরাস ফ্যামিলির ভাইরাসের কারণে মাম্পস হয়।


এই ভাইরাসটি হাঁচি-কাশি বাতাসের মাধ্যমে আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ বা ব্যবহৃত জিনিসের (ফোমাইট) মাধ্যমে এটি ছড়াতে পারে। তাই এটিকে খুবই ছোঁয়াচে রোগ বলা যায়।

চিকিৎসা


বেশির ভাগ রোগী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সরাসরি নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। রোগটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি হওয়ায় অ্যান্টিবায়োটিকের তেমন কার্যকারিতা নেই। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে নিজে থেকে সেরে ওঠে।


নিয়ন্ত্রণে করণীয়


* জ্বর বা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল খেতে পারেন।


* ফোলার জন্য গরম অথবা ঠাণ্ডা ছেঁক।


* সেসব খাবার এড়িয়ে চলুন, যেগুলো  চিবানোর প্রয়োজন। নরম খাবার খেলে ভালো হয়।


* প্রচুর পরিমাণে জল ও তরল গ্রহণ করুন।


* সংক্রমণ ছড়ানো প্রতিরোধ করতে অন্যদের থেকে আলাদা থাকা।


* খারাপ কোনো লক্ষণ-উপসর্গ দেখা দিলে বা ব্যথা ও ফোলা বেশি হলে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।


প্রতিরোধ


মিজেলস, মাম্পস, রুবেলার (এমএমআর) টিকার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রথমটি ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সে এবং দ্বিতীয়টি চার থেকে ছয় বছর বয়সে। সংক্রমিত ব্যক্তির জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ যে হাঁচি-কাশির সময় তাদের মুখ ও নাক ঢেকে রাখা, যাতে অন্য ব্যক্তির মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে না পড়ে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.