সারা বছর অযত্নে থাকা রেডিওটার যত্ন নিতে মহালয়ার আগে ডাক পড়ে কলকাতার একমাত্র রেডিও ম্যানের
ODD বাংলা ডেস্ক: সারা বছর বেতারটি অসাধাবধানতা ও অযত্নে পড়ে থাকলেও মহালয়ার আগের দিন বঙ্গজীবনে বেতারের আদর-যত্ন বেড়ে যায়। তার কারণ হল মহালয়ার সকালে বেতারে 'মহিষাসুরমর্দিনী' শোনা। কিন্তু ধুলোমাখা রেডিও-তে যদি কোনও সমস্যা হয়, বেতার যদি চালু না হয়, তাহলে কী হবে। এক্ষেত্রে, আপনাকে সাহায্য করতে পারেন কেবলমাত্র একজনই, তিনি হলেন অমিত রঞ্জন কর্মকার, কলকাতার একমাত্র রেডিও-ম্যান। আপনার রেডিও যতই পুরনো আমোলের হোক, তার অবস্থা যতই করুণ হোক না কেন আপনার বেতারের হাল ফিরিয়ে দেবেন অমিত রঞ্জন কর্মকার।
ষাটোর্ধ্ব হয়েও মহালয়ার আগে দম ফেলার অবকাশ থাকে না তাঁর। যতই হোক মহালয়ার আগে সকলের রেডিও সেট সারিয়ে দিতে হবেই তাঁকে। তিনি বলেন, 'অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েরা আমাকে এসে বলে যে, কাকু এটা(রোডিও) আমাকে মহালয়ার আগে একটু সারিয়ে দিন, আমার ঠাকুরদা এটা আমার বাবাকে দিয়েছিলেন।' হাতে স্মার্টফোন থাকা নবপ্রজন্ম যাঁরা মোবাইল ফোনেই রেডিও শোনে, তারা এই একটা দিনের জন্য হলেও বেতার সেটের প্রতি একটা টান অনুভব করে।
মহালয়ার সকালে বেতারে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের ব্যারিটোন গলায় 'মহিষাসুরমর্দিনী' দিয়ে দুর্গাপুজোর কাউন্ডাউন শুরু হয়। আজকের প্রজন্মের কাছে একাধিক উপায় আছে 'মহিষাসুরমর্দিনী' শোনার। কিন্তু বয়স্ক মানুষরা আজও মহালয়ার দিন বেতারেই 'মহিষাসুরমর্দিনী' শুনতে পছন্দ করেন। মহালয়ার বিশেষ দিনে বেতারে 'মহিষাসুরমর্দিনী' শোনার যে আনন্দ রয়েছে, তা আর অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না।
অমিত রঞ্জন কর্মকার আরও বলেন. 'বেতার এবং টেলিভিশনের মধ্যে কোনও তুলনা চলে না। আর আমি এটা মানতেও পারি না।' তাঁর নিজেরও একটি মোবাইল ফোন আছে বটে, তবে তা বিশেষ চালাতে পারেন না তিনি। তিনি নম্বর ফোনে রাখেন না নোটবুকে লিখে রাখেন।
প্রসঙ্গত, কিছুকাল আগেও কলকাতায় অনেকগুলি দোকান ছিল যারা রেডিও সেটগুলি মেরামত করত, তবে দ্রুত পরিবর্তিত প্রযুক্তির আগমনের ফলে তাঁরা আর আগের মতো খদ্দের পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে কর্মকার বাবুর মতো মানুষ পাওয়া শহর কলকাতায় দুষ্কর। তবে কর্মকারবাবুর হাত ধরেই বেঁচে থাকুক বঙ্গ জীবনের অঙ্গ রেডিও।
Post a Comment