সুভদ্রা ফোঁটা দেন কৃষ্ণকে, যমুনা যমকে! কীভাবে শুরু হল ভাইফোঁটার উত্‍সব?


ODD বাংলা ডেস্ক: ভাই-বোনের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে ১৪ ও ১৫ নভেম্বর পালিত হবে ভাইফোঁটা। শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি পড়ছে ১৪ নভেম্বর দুপির ২ টো ৩৬ মিনিটে। শেষ হবে ১৫ নভেম্বর ১ টা ৪৭ মিনিটে। এরই মাঝে রয়েছে ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার শুভ মুহূর্ত।। শুধু বাংলা নয়, বিভিন্ন নামে দেশের বিভিন্ন অংশেই প্রচলিত ভাই-বোনের এই বিশেষ দিনটি উদযাপনের প্রথা। এ রাজ্যে যা ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া নামে পরিচিত, দক্ষিণ ভারতে তাই যমদ্বিতীয়া হিসেবে পালিত হয়। মহারাষ্ট্র ও গুজরাতে আবার এটি ভাই বিজ নামে পরিচিত। প্রতিবেশী দেশ নেপালে এই আচারকে বলা হয় ভাই টিকা। অনেক জায়গায় একে ভাই দুজও বলা হয়ে থাকে। তবে নাম যাই হোক না কেন, এর উদ্দেশ্য একটাই ভাই ও বোনের মধ্যে স্নেহের সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে গড়ে তোলা।

পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী নরকাসুরকে বধ করে এইদিন বোন সুভদ্রার কাছে গিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সুভদ্রা দাদাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন কপালে তিলক কেটে ও ফুল-মিষ্টি দিয়ে। সেই থেকে ভাইয়ের দীর্ঘজীবন কামনায় বোনেরা কপালে ফোঁটা বা তিলক দেন। ভাইফোঁটার উত্‍স হিসেবে আরও একটি প্রচলিত লোককথা হল এদিন যমরাজ গিয়েছিলেন বোন যমুনার কাছে। যমুনা বা যমীও এইভাবে অগ্রজকে বরণ করে নিয়েছিলেন। সেই কারণে বাংলার ঘরে ঘরে যে ছড়াটি বলে বোনেরা ভাইদের কপালে ফোঁটা দিয়ে থাকে, সেখানেও যম ও যমুনার উল্লেখ পাওয়া যায় ---

'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।

যমুনা দেন যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।'

ভাইফোঁটা এমন এক উত্‍সব যেখানে ব্রাহ্মণ পূজারীর দরকার হয় না। তবু বিশেষ না হলেও এরও আছে কিছু রীতি রেওয়াজ। ভোরে স্নান সেরে শুদ্ধ কাপড়ে ফোঁটা দেওয়া-নেওয়াই রেওয়াজ। ফোঁটা দেওয়া ও গ্রহণের আগে উপবাস রাখা হয়। ফোঁটা বা তিলকদানের পর্ব মিটলে খাওয়া-দাওয়ার পাট। ভারতের অন্য প্রদেশে তিলকদানের পরে ভাইয়ের হাতে দেওয়া হয় নারকোল। যাঁরা কোনও কারণে ভাইফোঁটা দিতে পারছেন না তাঁরা দেওয়ালে তিলক বা ফোঁটা দেন। অনেক জায়গায় আবার আকাশের চাঁদের উদ্দেশেও ফোঁটা উত্‍সর্গ করার রীতি আছে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.