কালীপুজোর রাতে মন্দির থেকে শুনতে পাওয়া যায় মায়ের পায়ের নুপূরধ্বনি! হেঁটে-চলে বেড়ান দেবী
ODD বাংলা ডেস্ক: কালীপুজোর রাতে মন্দির থেকে শুনতে পাওয়া যায় মায়ের পায়ের নুপূরধ্বনি! দেবীকে নাকি হেঁটে বে়ড়াতেও দেখেছেন অনেকে! রায়গঞ্জ বন্দরের আদি কালীবাড়ির পুজো নিয়ে এমনই অনেক গল্প রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৫০০ বছরের পুরোনো এই কালীপুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ভক্তি এবং নিয়ম-নিষ্ঠা। আড়ম্বর নয়। প্রাচীনত্ব এবং দেবীর অলৌকিক মহিমার টানেই আজও কালীপুজোর রাতে পার্শ্ববর্তী জেলা ও ভিন রাজ্য থেকেও বহু মানুষ ভিড় করেন রায়গঞ্জ বন্দরের আদি কালীবাড়িতে। বলা যায়, উত্তর দিনাজপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন ও জনপ্রিয় কালীপুজো এটি।
রায়গঞ্জ বন্দরের এই কালীবাড়ির পুজো ঠিক কত বছর আগে শুরু হয়েছিল, তা কারও জানা নেই। শোনা যায়, প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগে এই পুজোর প্রচলন হয়। সিদ্ধিলাভের জন্য পঞ্জাব প্রদেশের এক সাধু হেঁটে এসে কুলিক নদীর তীরে বন্দর এলাকায় একটি গাছের নীচে পঞ্চমুণ্ডি আসন প্রতিষ্ঠা করে সাধনায় বসেন। সিদ্ধিলাভও করেন তিনি। তারপর তিনি চলে যান। সেই থেকেই এই পঞ্চমুণ্ডির বেদিতে কালীপুজো শুরু হয়। তারপর নানা অলৌকিক ঘটনার পর এখানে মন্দির নির্মাণ হয়।
স্থানীয়রা জানান, এই আদি মন্দিরের মা কালী খুব জাগ্রত। কায়মনোবাক্যে কিছু প্রার্থনা করলে তা পূরণ হবেই। প্রাচীনকালে বণিকেরা কুলিক নদী দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে যাওয়ার সময় এই মন্দিরে পুজো দিতে যেতেন। আর কালীপুজোর রাতে পড়শি রাজ্য থেকেও ভক্তরা এখানে আসতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ভগবান প্রসাদ সাহার কথায়, ‘আগে কালীপুজোর রাতে মন্দিরের পাশের ঘাটে নৌকার ভিড় লেগে যেত। আজও যাঁরা এই মন্দিরের কথা জানেন, তাঁরা মনস্কামনা পূরণের জন্য এখানে আসেন।’
কালীপুজোর রাতে কলকাতা সহ অন্যান্য জেলার পাশাপাশি ওড়িশা, বিহার, এমনকি প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর ভক্ত আসেন রায়গঞ্জ বন্দরের এই আদি কালীবাড়িতে। তবে করোনার জেরে গত বছর থেকে ভক্তের সংখ্যা খানিকটা কমেছে বলে জানান পুরোহিত মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, এখানে তন্ত্রমতে দেবীর পুজো হয়। কালীপুজোর দিন শোল মাছ দিয়ে মা-কে বিশেষ ভোগ দেওয়া হয়। রয়েছে পাঁঠাবলির প্রথাও। কালীপুজোর আর বেশি দেরি নেই। তাই এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মন্দির কমিটির সদস্যরা। গত বছরের মত এবছরও করোনাবিধি মেনেই পুজো হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
Post a Comment