গর্ভাবস্থায় কি যৌনমিলন করা যায়? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান
হবু বাবা-মায়েরা প্রায়শই এটি ভেবে বিস্মিত হন যে গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করা নিরাপদ কিনা এবং এটি কোনওভাবে গর্ভস্থ সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে কিনা।হবু মায়েরা আবার তাদের মধ্যে হয়ে থাকা হরমোনের পরিবর্তনগুলি,অবসন্ন বা ক্লান্তিবোধ এবং তাদের মধ্যে দেখা দেওয়া পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে আত্ম-সচেতনতাবোধের সাথে সংগ্রাম করে থাকেন যা তাদের কামশক্তির উপর একটা প্রভাব ফেলতে পারে।গর্ভাবস্থায় যৌনসহবাস করার সর্বোত্তম সময় কোনটি,এর উপকারিতাগুলি,কখন এটি এড়িয়ে চলতে হয়,এর সুরক্ষিত অবস্থানগুলি কি এবং এ সংক্রান্ত বারংবার জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলীগুলি শণাক্ত করতে এই নিবন্ধটি আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
আপনার যদি একটি সুস্থ,স্বাস্থ্যকর এবং স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা বজায় থাকে,সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার শেষ ত্রৈমাসিকের আগে পর্যন্ত সঙ্গম করা সম্পূর্ণরূপেই সুরক্ষিত।গর্ভাবস্থায় যৌনমিলন করা আপনার স্বাস্থ্য এবং আপনার সম্পর্ক উভয় ক্ষেত্রের জন্যই বেশ ভাল।গবেষণায় আবার এমনকি এটিও দেখা যায় যে,যে সকল গর্ভবতী মহিলা নিয়মিতভাবে সঙ্গমে লিপ্ত হন তাদের সময়ের পূর্বে বা অকাল প্রসবের সম্ভাবনা কম থাকে।
তবে,আপনার ডাক্তারবাবু যদি উল্লেখ করেন যে আপনার গর্ভাবস্থা্র ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে অথবা তিনি যদি কিছু নির্দিষ্ট ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির কারণে গর্ভাবস্থাকালে আপনাকে সঙ্গম করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন,তবে সেক্ষেত্রে আপনার ডাক্তারের উপদেশ মান্য করে যৌনসহবাস থেকে নিরস্ত থাকাই ভাল।
গর্ভাবস্থায় কখন সঙ্গম করা নিরাপদ নয়?
আপনি যদি ভাবতে থাকেন যে কখন একজন গর্ভবতী মহিলার সঙ্গম করা বন্ধ করা উচিত,এখানে সেরকমই কিছু পরিস্থিতির উল্লেখ করা হল যখন গর্ভাবস্থায় আপনাকে আপনার ডাক্তারবাবু যৌনসহবাস করা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিতে পারেনঃ
গর্ভপাতের ইতিহাস থেকে থাকলেঃ এই গর্ভাবস্থার পূর্বে যদি আপনার কোনও গর্ভপাত হয়ে থাকার ইতিহাস থেকে থাকে,সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় আপনার যৌনমিলন থেকে বিরত থাকা হল সবচেয়ে নিরাপদ।
যোনি থেকে রক্তপাত হওয়াঃ যোনি থেকে রক্তপাত হওয়া বা দাগ দেখা যাওয়া গর্ভপাতের মত বিপদের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে এবং গর্ভাবস্থায় যদি আপনার যোনি থেকে কোনওরকম রক্তপাত হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে সঙ্গম এড়িয়ে চলাই ভাল।
শ্রোণী যন্ত্রণাঃ সঙ্গম করার পর যদি আপনার শ্রোণীতে ব্যথা অথবা তলপেটে খিঁচুনি দেখা দেয়,আপনার তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা এবং গর্ভাবস্থায় সঙ্গম এড়িয়ে চলা উচিত।
প্ল্যাসেন্টা প্রিভিয়া: আপনার যদি নিম্নবর্তী-প্লাসেন্টা বা প্লাসেন্টা প্রিভিয়া থেকে থাকে তবে গর্ভাবস্থায় যৌনমিলন এড়িয়ে চলা উচিত।
অনুপযুক্ত সার্ভিক্সঃ আপনার যদি একটি দুর্বল অথবা অনুপযুক্ত সার্ভিক্স থেকে থাকে,সেক্ষেত্রে সঙ্গম করা অনিরাপদ।সার্ভিক্সটি জরায়ুর কাছে খুলে থাকে এবং যোনির উপর অবস্থিত হয়।একটি দুর্বল সার্ভিক্স খুব তাড়াতাড়ি খুলে যেতে পারে এবং যা আপনাকে অকাল প্রসবের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
STD গুলিঃ যদি আপনার অথবা আপনার সঙ্গীর মধ্যে যৌন বাহিত রোগগুলি থেকে থাকে,সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায়া পনার যৌনসহবাস থেকে বিরত থাকাই উচিত,কারণ আপনি হয়ত এই রোগটির কবলে পড়তে পারেন এবং এটি আপনার গর্ভাবস্থার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
অকাল প্রসবের ইতিহাসঃ অতীতে যদি আপনি নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সন্তান প্রসব করে থাকেন অথবা এই গর্ভাবস্থায় যদি আপনার মধ্যে পূর্ব প্রসবের কোনওরকম লক্ষণ প্রকাশ পায়,সেক্ষেত্রে সঙ্গম এড়িয়ে চলাই নিরাপদ।
আপনি যদি গর্ভে একাধিক সন্তান ধারণ করে থাকেনঃ আপনি যদি গর্ভে যমজ অথবা তিনটি সন্তান ধারণ করে থাকেন,এই সময় আপনার সঙ্গম এড়িয়ে চলাই উচিত কারণ এক্ষেত্রে এটি টান লাগা,রক্তপাত হওয়া অথবা সংকোচন ঘটার কারণ হয়ে উঠতে পারে।গর্ভে একাধিক সন্তান ধারণ অকাল প্রসবের ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়ায় আবার তার উপর সঙ্গম সেই ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
যদি আপনার জল ভেঙ্গে যায়ঃ যখন আপনার জল ভেঙ্গে যায় অ্যামনিওটিক থলিতে পূর্ণ তরল যা আপনার গর্ভস্থ শিশুটিকে রক্ষা করে,সেটি জরায়ু থেকে ছিন্ন হয়ে যায়।এরপর এই তরলটি যোনি থেকে লিক করতে শুরু করে।সুতরাং যদি আপনার জল ভেঙ্গে যায় সেক্ষেত্রে সঙ্গম করা অনিরাপদ কারণ এর ফলে শিশুর মধ্যে সংক্রমণ হতে পারে।
আপনার যৌন-জীবন কীভাবে গর্ভাবস্থার দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে?
গর্ভাবস্থা আপনার যৌন-জীবনে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে আপনার সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থা জুড়ে আপনার যৌনদ্যম বাড়তে অথবা কমতে পারে।হরমোনের উত্থান পতনের কারণে এবং তাদের চেহারা সম্পর্কে স্ব-সচেতনতাবোধের কারণে অনেক গর্ভবতী মহিলাই হয়ত কম যৌনদ্যম অনুভব করে থাকতে পারেন।তবে,এমন অনেক গর্ভবতী মহিলাও আছেন যারা এই সময়ে তাদের কামশক্তি বৃদ্ধির কথাও জানিয়েছেন।
প্রথম ত্রৈমাসিক:
গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে,মহিলারা সাধারণত প্রাতঃকালীন অসুস্থতা,মেজাজের দোলাচল,ক্লান্তিবোধ,নমনীয় স্তন এবং বারংবার প্রস্রাব ত্যাগের প্রবণতার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকেন।হরমোনীয় পরিবর্তনগুলির পাশাপাশি এই সকলকিছুই গর্ভবতী মহিলাদের কামশক্তি বৃদ্ধির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকঃ
অনেক মহিলাই তাদের গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সঙ্গম করার সময় তাদের যৌনকামনা বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।প্রথম ত্রৈমাসিকের প্রাতঃকালীন অসুস্থতা এবং অন্যান্য অস্বস্তিগুলি সাধারণত তাদের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক আসার সাথে সাথে উধাও হয়ে যায়।এই সময়ে এখনও পর্যন্ত আপনার গর্ভাবস্থার বিশেষ পেটটি রীতিমত যথেষ্ট ছোটই থাকে তার ফলে আপনি বেশ সহজেই সঙ্গম করতে পারেন।গর্ভাবস্থায় মহিলাদের দেহের মধ্যে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায়,আর এই কারণেই শ্রোণী অঞ্চলে রক্ত সঞ্চালনা বাড়ে এবং এর ফলে যোনির যৌন চাহিদা বেড়ে যায়।এটি ঐ অঞ্চলে সংবেদন বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং মহিলাদের প্রচণ্ড উত্তেজনায় আরও সহজেই সহায়তা করতে পারে।
তৃতীয় ত্রৈমাসিকঃ
অসংখ্য মহিলা তাদের গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সঙ্গম করার সময় তাদের মধ্যে যৌন কাম উদ্দীপনা হ্রাস পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।এর কারণ হল তাদের গর্ভাবস্থার পেটটি আকারে বৃহৎ হয়ে ওঠার কারণে তারা সঙ্গম করার একাধিক অবস্থানে অস্বস্তিবোধ করেন।প্রসব সংক্রান্ত ব্যাপারে এবং আসন্ন প্রসবের তারিখটি নিকটস্থ হওয়ার কারণে আপনার মাতৃত্ববোধ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন থাকার কারণে আপনিও হয়ত এই সময়ে সহবাসে কম উৎসাহবোধ করতে পারেন।এই অনুভূতিগুলি সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক এবং শেষ ত্রৈমাসিকে সঙ্গম থেকে বিরত থাকা একাধিক গর্ভবতী মহিলার কাছেই অস্বাভাবিক কিছু নয়।
গর্ভাবস্থায় সঙ্গমের উপকারিতাগুলি
সুস্থ এবং স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করা মা এবং তার গর্ভস্থ শিশু উভয়ের ক্ষেত্রেই উপকারি হতে পারে।গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করার কিছু উপকারিতার উল্লেখ এখানে করা হলঃ
ভালো উত্তেজনাঃ শ্রোণী অঞ্চলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি জননাঙ্গে সংবেদন বাড়িয়ে তোলে এবং এটি মহিলাদের উত্তেজনায় এবং এমনকি একাধিকবারের ক্ষেত্রেও আরও সহজে সহায়তা করে থাকে।
ভালো ঘুমঃ গর্ভাবস্থায় যৌনমিলন মাকে শিথিল করে তোলে এবং আপনাকে আরও ভালভাবে ঘুমাতে সহায়তা করে।এছাড়াও যৌন মিলনের দোলন আন্দোলনটি শিশুকে ঘুমে আচ্ছন্ন করে তুলতে সহায়তা করে।
অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিঃ গবেষণায় দেখা যায় যে,সঙ্গম একটি বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধি করে যা সর্দি কাশি এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
বেদনা হ্রাসঃ সঙ্গমের প্রচন্ড উত্তেজনা থাকার ফলে অক্সিটোসিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয় যাতে ব্যথার জন্য প্রায় 70% এরও বেশি সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে দেখা যায়।
রক্তচাপ কমায়ঃ সঙ্গম করায় রক্তচাপ হ্রাস পাওয়া,গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী।কারণ গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ প্রিক্ল্যাম্পসিয়া নামক একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
অন্তরঙ্গতার উন্নতি ঘটায়ঃ প্রচণ্ড উত্তেজনায় নিঃসৃত অক্সিটোসিন হরমোনটিকে আবার “প্রণয়াকাঙ্ক্ষী হরমোন” নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে এবং এটি আপনার সঙ্গীর প্রতি অনুরক্তি এবং ঘনিষ্ঠতার অনুভূতিটি বৃদ্ধি করে।
গর্ভাবস্থায় সঙ্গমের উপকারিতাগুলি
প্রসব পরবর্তী পুনরুদ্ধারের গতি বৃদ্ধিঃ গর্ভাবস্থায় প্রচণ্ড উত্তেজনা থাকলে তা গর্ভস্থ শিশু প্রসবের জন্য শ্রোণী তল প্রস্তুত করতে সহায়তা করে,যা প্রসব পরবর্তীতে পুনরুদ্ধারের গতি বৃদ্ধিতে পরিবর্তিত হয়।
সুখানুভব বা প্রসন্নতা বৃদ্ধিঃ প্রচণ্ড উত্তেজনা থাকার কারণে এন্ডোরফিনস নামক রাসায়নিকগুলির মুক্তি লাভ হয়, যা আনন্দ,যৌনক্ষুধা,যন্ত্রণা মুক্তি এবং আনন্দ উল্লাসের মত অনুভূতিগুলির সাথে যুক্ত।এটি মা এবং শিশু উভয়কেই সুখী এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে
ক্যালোরি দহনঃ দেহস্থ ক্যালোরি দহন করার একটি ভালো উপায় হল সঙ্গম করা।30 মিনিটের যৌন সহবাস 50 ক্যালোরির বেশি দহন করতে পারে।সুতরাং সুস্থ এবং ফিট থাকার জন্য গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করা হল একটি দুর্দান্ত উপায়।
গর্ভবতী থাকাকালীন সঙ্গম করার সময় এবং সঙ্গম করার পরবর্তীতে হয়ে থাকা সমস্যাগুলির লক্ষণসমূহ
আপনি গর্ভবতী থাকাকালীন সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার সময় যদি কোনওরকম সমস্যার লক্ষণ দেখা দেয়,আপনার সেই মুহূর্তে থেমে গিয়ে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।অনুরূপভাবে,আপনার সঙ্গম করার পরবর্তীতেও হয়ে থাকা যেকোনও সমস্যার ক্ষেত্রে সঠিকভাবেই আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করে থাকার কারণে হয়ে থাকা বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি যেগুলি মহিলারা হয়ত অনুভব করে থাকতে পারেন তার মধ্যে রয়েছে রক্তপাত বা দাগায়িতকরণ,ভ্রূণের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং জরায়ুর সংকোচনগুলি।সঙ্গমের পরে সামাণ্য রক্তপাত বা দাগায়িতকরণ এবং হালকা খিঁচুনি হওয়া বেশ সাধারণ ব্যাপার। তবে গর্ভাবস্থায় যৌন সহবাস করার সময় কিম্বা করার পরে আপনার মধ্যে যদি নিম্নলিখিত এই সমস্যাগুলির মধ্যে কোনও একটিও থেকে থাকে তবে আপনি একজন যৌন থেরাপিস্টের কাছে যেতে চাইতে পারেন।
সঙ্গমের সময় যন্ত্রণা
মারাত্মক রক্তপাত
অ্যামনিওটিক তরল লিক করে যাওয়া
যন্ত্রণাদায়ক খিঁচুনি যা কিছুতেই কমতে চায় না
গর্ভাবস্থায় আপনি কীভাবে নিরাপদে সঙ্গম করতে পারেন?
এখানে গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করার কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হল যা সংক্রমণগুলি হওয়া থেকে আপনাকে এবং তার সাথে আপনার গর্ভস্থ শিশুটিকে নিরাপদে রাখা নিশ্চিত করেঃ
STD বা যৌনবাহিত রোগগুলি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুনঃ যৌন বাহিত রোগগুলি হবু মা এবং তার গর্ভস্থ শিশুর জন্য মারাত্মক।মুখ,পায়ু অথবা যৌন সঙ্গম দ্বারা এই সকল যৌন বাহিত রোগগুলি প্রবেশ করে। গর্ভাবস্থায় কেবলমাত্র একজন ব্যক্তির সাথেই সঙ্গম করুন এবং তার যে এ ব্যাপারে একাধিক সঙ্গিনী নেই তা নিশ্চিত করুন।STD বা যৌন বাহিত রোগ আছে এরকম সঙ্গীর সাথে সঙ্গম করা এড়িয়ে চলুন।
পায়ু সংক্রান্ত বা মলদ্বার সম্পর্কিত সঙ্গম এড়িয়ে চলুনঃ পায়ু সংক্রান্ত সঙ্গমে পুং জননেন্দ্রিয় দ্বারা পায়ু ভেদন জড়িত।এটি গর্ভাবস্থায় সম্পূর্ণরূপে অনিরাপদ কারণ পায়ু বা মলদ্বার ব্যকটিরিয়ায় পরিপূর্ণ থাকে যা সংক্রমণ হওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।গর্ভাবস্থায় পায়ু সংক্রান্ত সঙ্গম করা এড়িয়ে চলা সবচেয়ে ভালো।
যোনির ভিতর বায়ু সঞ্চালন করা এড়িয়ে চলুনঃ আপনি যদি মুখ-সঙ্গম করে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনার সঙ্গীটি যে আপনার যোনির ভিতর তার মুখের সাহায্যে ফুঁ দিয়ে বায়ু সঞ্চালনা করবে না সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করুন।এটি এয়ার এম্বলিজম সৃষ্টি করতে পারে,যা হল একটি বায়ুর বুদবুদ এবং সেটি রক্তবাহগুলিকে অবরুদ্ধ করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করার অবস্থানগুলি
এখানে কিছু নিরাপদ এবং আরামদায়ক যৌন অবস্থানের উল্লেখ করা হল যেগুলি আপনি গর্ভাবস্থার সময় প্রয়োগ করার চেষ্টা করতে পারেনঃ
বসে বসেঃ আপনার সঙ্গীটি যখন একটি স্থির চেয়ারে বসবেন তখন তার কোলের উপর বসুন।আপনি প্রয়োজনানুযায়ী উঠে দাঁড়িয়ে বা উবু হয়ে গিয়ে অনুপ্রবেশের গভীরতাটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
পাশাপাশিঃ এই অবস্থানটিকে আবার স্পুনিং বা চামচের ন্যায় বক্র অবস্থানও বলা হয়ে থাকে,এই অবস্থানে সঙ্গমের সময় আপনার পেটের উপর পড়া চাপ হ্রাস পায়।আপনার সঙ্গীর সাথে পাশাপাশি শুয়ে পড়ুন এবং তাকে আপনার পিছনের দিকে শুতে বলুন।এটি কেবলমাত্র অগভীরভাবেই অনুপ্রবেশের সহায়ক হয়।
গর্ভাবস্থায় সঙ্গম করার অবস্থানগুলি
মহিলার শীর্ষে অবস্থানঃ সঙ্গমের এই অবস্থানটিতে আপনার পেটের উপর পড়া চাপ কমায় এবং অনুপ্রবেশের গভীরতা এবং গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে আপনাকে সহায়তা করে।এই অবস্থানটি গর্ভবতী মহিলাদের উচ্চ যৌন তৃপ্তির সাথে সংযুক্ত।এক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীটি চিৎ শুয়ে অথবা বসে থাকেন এবং মহিলাটি হয় পিছন ফিরে অথবা মুখোমুখি হয়ে দুই পা ফাঁক করে তার উপর অবস্থান করেন।
গর্ভবতী থাকাকালীন আপনি কি মুখের দ্বারা সঙ্গম করতে পারেন?
গর্ভাবস্থায় মুখের দ্বারা সঙ্গম করা সম্পূর্ণ নিরাপদ।তবে আপনার সঙ্গীটি যে এইভাবে সঙ্গম করার সময় আপনার যোনির ভিতরে ফুঁ দিয়ে বায়ু প্রবেশ করাবেন না সেই ব্যাপারটিকে নিশ্চিত করুন।এর ফলে এয়ার এম্বা্লিজম নামক এক গুরুতর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।এছাড়াও আবার STD বা যৌন বাহিত রোগ আছে এমন সঙ্গীর সাথে ওরাল সেক্স করা এড়িয়ে চলুন।
আপনি আপনার সঙ্গীর অন্তরঙ্গ হওয়ার আরও অন্যান্য উপায়গুলি
আপনি যদি সঙ্গম করতে না চান সেটা একদম ঠিক আছে।তবে এক্ষেত্রে আরও অন্যান্য উপায় আছে যার দ্বারা আপনি আপনার সঙ্গীর কাছাকাছি আসতে পারেন।
সোহাগপূর্ণ ভাবে জড়িয়ে ধর
মালিশ- উভয়ে পরস্পরকে মালিশ করে দিলে দুসজনের মধ্যেই বন্ধন দৃঢ় হয়।
চুম্বন
মিলিত হস্তমৈথুন– দুজনে পরস্পরকে স্পর্শ করে হস্তমৈথুন করলে সঙ্গম না করা সত্বেও দুজনের মধ্যে নৈকট্য বৃদ্ধি পাবে।
মুখসঙ্গম-যদি যোনী সঙ্গমে অস্বস্তিবোধ করেন তাহলে মুখসঙ্গম করতে পারেন।এই উপায়ে আপনার সঙ্গীর সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে তুলতে পারেন যোনী সঙ্গম না করেও।
Post a Comment