মথুরা রেপ কেস (Mathura Rape) ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে পরিচিত। ১৯৭২ সালে মহারাষ্ট্রের মথুরা নামে এক আদিবাসী তরুণীর ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে এই মামলা উঠে আসে। মথুরা তার ভাইয়ের সাথে থানায় এসেছিলো, যেখানে তাকে থানার দুজন পুলিশকর্মী ধর্ষণ করে। কিন্তু, এই ঘটনা সত্ত্বেও, আদালত প্রথমে অভিযুক্তদের নির্দোষ ঘোষণা করে, যা দেশজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার করে।
এই মামলার প্রথম পর্যায়ে, বিচারপতি অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দেন। আদালত উল্লেখ করে যে মথুরার কোন শারীরিক প্রতিরোধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং ধর্ষণের সময় তার শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্নও ছিল না। এছাড়াও, মথুরার বয়স এবং তার যৌন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাকে সন্দেহজনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর ফলে অভিযুক্তদের নির্দোষ বলে রায় দেওয়া হয়, যা সেসময় বড় আকারের বিতর্ক সৃষ্টি করে।
এই রায়ের পর দেশজুড়ে নারীবাদী সংগঠনগুলি এবং মানবাধিকার কর্মীরা তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। তারা বিচার ব্যবস্থার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন এবং পুনর্বিচারের দাবি জানান। তাঁদের মতে, এই রায় মহিলাদের বিরুদ্ধে অন্যায় এবং পুলিশের অসৎ ব্যবহারকে সমর্থন করে।
তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর, এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। ১৯৭৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাদের শাস্তি ঘোষণা করে। এই রায়ের মাধ্যমে ভারতে যৌন নিপীড়ন নিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। মথুরা রেপ কেসের পরে ১৯৮৩ সালে ফৌজদারি আইন সংশোধন করা হয়, যা ধর্ষণ আইনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে এবং ধর্ষণের শিকার মহিলাদের নিরাপত্তা বাড়ায়।
মথুরা রেপ কেস শুধু একটি আইনি মামলা নয়, এটি ভারতীয় সমাজে মহিলাদের প্রতি অবিচার এবং পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ হিসেবে গণ্য হয়। এই মামলাটি ভারতে নারীর অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করেছে এবং এর পরবর্তী সময়ে ধর্ষণ আইন এবং বিচারব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।
#westbengalrapecase #rgkar #wewantjustice
Post a Comment