ঢাকিরা আজ বিলুপ্ত, রেকর্ড মিউজিকের জমানায় আজ তারা ব্রাত্য
Odd বাংলা ডেস্কঃ বাঙালীর সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। আর শরতের পেঁজা তুলোর মতো মেঘ, কাশফুল, শিউলি ফুলের পাশাপাশি আর যে জিনিসটা না হলে দুর্গাপুজো নেহাতই অসম্ভব, তা হল ঢাকের আওয়াজ। ঢাকে কাঠি পড়লেই তা যেন জানান দেয় মায়ের আগমনী বার্তা। ঢাক ছাড়া দুর্গাপুজো যেন কার্যতই অসম্ভব।
ড্রামের মতো এই বাদ্যযন্ত্রটি গলায় ঝুলিয়ে ছন্দবদ্ধ গতিতে যখন ঢাকিরা ঢাক বাজান তখন মনটি কেমন যেন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তবে ঢাকের শব্দটি দুর্গাপুজোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হলেও বাঙালির ঘরে যেকোনও ঠাকুরের আরাধনায় ঢাকের ব্যবহার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু যাদের হাতের জাদুতে ঢাকের বোলে শরীর-মন আন্দোলিত হয়, সেই ঢাকিরা আজ বেকার! যে দুর্গাপুজোর জন্য তারা মুখিয়ে থাকে, সেই উৎসবের মরশুমেই কাজের বরাত পান না ঢাকিরা।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজো প্রায় শুরুরই হয়ে গিয়েছে বলা চলে, এই সময়ে ঢাকিদের সাধারণত কাটে কর্মব্যস্ততার মধ্য দিয়ে। কিন্তু এই বছর সেই ঢাকিরাই কর্মহারা। মালদা, জলপাইগুড়ির পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের একাধির জেলা থেকে আসা ঢাকিরা আর রীতিমতো কর্মহারা। আবার কেউ কেউ নিজের জেলা ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে চলে যাচ্ছেন। কেন চাহিদা কমছে এই ঢাকিদের। এর উত্তরে এক ঢাকি জানিয়েছেন, এখনকার উদ্যোক্তারা রেকর্ড করা গানই বাজানোই বেশি পছন্দ করে। পাঁচদিনের জন্য উদ্যোক্তারা ঢাকীদের অর্থ দিতে চান না।
পাশাপাশি জেলাগুলিতে ঢাকিদের বেতনও খুব খম, তবে কলকাতা বা শহরাঞ্চলে এই টাকার পরিমাণ অনেকটা বেশি হলেও আজকাল শহরে ঢাকের বোলের চাহিদা যেন তলানিতে এসে ঠেকেছে। একটা সময়ে ছিল যখন কেবল পুজোই নয়, বিয়ের মতো অনুষ্ঠানেও ঢাক বাজানোর একটা চল ছিল বলেও জানান ঢাকিরা, কিন্তু এখন যেন সেই প্রবণতাটাও অনেকটা হারিয়ে যাচ্ছে। যার জেরে যাদের পূর্বপুরষরা ঢাক বাজিয়েই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতেন, আর তাঁরাই পেট চালানোর দায়ে আজ অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন, কারণ ঢাক বাজিয়ে আর গোটা সংসারের ভার বহন করা যায় না বলেই মনে করছেন, ঢাকিরা।
Post a Comment