নররক্ত ছাড়া পুজো হয় না এই দেবী দুর্গার! ৫০০ বছর ধরে আজও চলছে এই রীতি..

Odd বাংলা ডেস্ক: কোচবিহারের রাজ আমলের বড়দেবী মন্দির। বড়দেবী বাড়ির দুর্গাপুজোর আলাদা মাহাত্ম রয়েছে। উত্তরবঙ্গ, অসম তো বটেই রাজ্যের মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে এই বড়দেবীর সাথে। প্রায় ৫০০ বছর আগে রাজ আমলে যখন এই পুজো শুরু হয়েছিল তখন এই মন্দির গড়ে ওঠে। এই মন্দিরের নামেই এলাকার নাম দেবী বাড়ি। রাজ আমলের পুজো, তাই পুজোর নিয়মও আলাদা। নর রক্ত ছাড়া এই দুর্গা তুষ্ট হন না। একসময় তো দেবীকে তুষ্ট করতে নরবলির প্রথাও ছিল। তবে এখন নর বলি না হলেও নররক্তে ভেজানো তুলোর পুতুল বলি দিয়ে সন্তুষ্ট করা হয় দেবীকে। ৫০০ বছর থেকে এটাই রীতি।

বড়দেবীর চেহারার সঙ্গে 'কোচ' জাতির মানুষের চেহারার বেশ কিছু মিল লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া বর্তমানে রাজবংশী গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত মানুষের দৈহিক গঠনের সাথেও যথেষ্ট সাযুজ্য লক্ষ্যণীয়। প্রাচীন এই পুজোয় বড়দেবীর গাত্রবর্ণ লাল, আকর্ণনয়ন, খর্ব নাশা এবং মুখের আকৃতি খানিক চ্যাপ্টা প্রকৃতির। মায়ের মূর্তি ১১ ফুট লম্বা হয়। অসুরের গাত্রবর্ণ এখানে সবুজ। মায়ের সাথে বাহন হিসেবে দেখতে পাওয়া যায় সিংহ, বাঘকে। এখানে 'বড়দেবী' রূপী মা সপরিবারে অবতীর্ণ হন না, তিনি তাঁর দুই সখী জয়া এবং বিজয়াকে সঙ্গে করে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন।

দেবীকে তুষ্ট করতে মহারাজা নরনারায়নের আমল থেকে শুরু হয়েছিল, নরবলি প্রথা ৷ তবে কিছু বছর পর সেই নরবলি বন্ধ হয়ে যায়। মাঝে বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবের কারনে এই নরবলি বন্ধের পর ফের সেই প্রথা চালু কিন্তু উনবিংশ শতকের শুরুতে এই প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। রাজ আমলের ইতিহাস থেকে জানা যায় মহারাজা শীবেন্দ্র নারায়ন তার আমলে নর বলির ভয়াবহতার কথা শুনে তা বন্ধ করেছিলেন। এরপর থেকেই নরবলি বন্ধ হলেও নর রক্তে ভেজানো পুতুল বলি দিয়ে তুষ্ট করা হয় বড় দেবীকে। অষ্টমীর রাতে গুপ্ত পুজোতে কালজানি গ্রামের এক পরিবার তাদের আঙ্গুল কেটে রক্ত দেবেন। সেই রক্ত দিয়েই তুষ্ট হবেন বড়দেবী। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.