হিন্দি না শিখে তামিলনাডুর কি খুব ক্ষতি হয়েছে?

 


ভারতে ভাষার প্রশ্ন বরাবরই সংবেদনশীল। বিশেষত, হিন্দি ভাষার প্রচলন ও বাধ্যতামূলক শেখানো নিয়ে নানা বিতর্ক লেগেই থাকে। তবে তামিলনাড়ু রাজ্য সেইসব বিতর্কের মধ্যে থেকেও হিন্দি শেখার বাধ্যবাধকতা মেনে নেয়নি। বরং রাজ্যটি তার মাতৃভাষা তামিল ও ইংরেজির উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তবু প্রশ্ন থেকে যায়—তামিলনাড়ু কি সত্যিই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে? নাকি এটি ভারতীয় ফেডারেলিজমের (সংঘীয় কাঠামোর) একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা?

তামিলনাড়ুর ভাষানীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা

তামিলনাড়ুর শিক্ষাব্যবস্থায় স্থানীয় ভাষা তামিল ও আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই রাজ্যটি হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছে। ১৯৬৫ সালে রাজ্যে বড় আন্দোলন হয়, যেখানে তামিলনাড়ুর জনগণ বাধ্যতামূলক হিন্দি শিক্ষার বিরোধিতা করে। এরপর থেকে রাজ্যে দ্বিভাষা নীতি চালু থাকে—তামিল ও ইংরেজি।

কী ক্ষতি হয়েছে তামিলনাড়ুর?

বহু বিশ্লেষক মনে করেন, হিন্দি না শেখার কারণে তামিলনাড়ুর জনগণ উত্তর ভারতীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে সরাসরি ভাষাগত সুবিধা পায়নি। তবে রাজ্যটির তথ্যপ্রযুক্তি, বাণিজ্য, ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তামিলনাড়ুর অর্থনীতি কখনোই পিছিয়ে পড়েনি। বরং এটি দেশের অন্যতম সমৃদ্ধশালী রাজ্যগুলোর মধ্যে একটি।

ভারতীয় ফেডারেলিজমের এক শিক্ষা

তামিলনাড়ুর অবস্থান ভারতীয় ফেডারেল কাঠামোর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটি প্রমাণ করে যে, কোনও রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা অন্ধভাবে অনুসরণ না করেও উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে। ভাষার ক্ষেত্রে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে একটি রাজ্য কীভাবে সফল হতে পারে, তামিলনাড়ু তার জীবন্ত উদাহরণ।

তাই বলা যায়, ভাষাগত বহুত্ববাদের মধ্যে থেকেও ভারতীয় রাজ্যগুলো তাদের নিজস্ব পথ বেছে নিতে পারে এবং সফল হতে পারে। তামিলনাড়ুর উদাহরণ আমাদের শেখায় যে, কেন্দ্রের নির্দেশনা মানা বাধ্যতামূলক নয়, রাজ্যের নিজস্ব সিদ্ধান্তই তার ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।

#TamilNadu #IndianFederalism #LanguageDebate #হিন্দি_বিতর্ক #India #তামিলনাড়ু #TamilLanguage #Federalism #IndianLanguages #TamilNaduSuccess

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.